Full width home advertisement

Post Page Advertisement [Top]




          কিছু দিন আগে আমার কয়েকজন জন বন্ধুর সাথে আমি হ্যাকিং বিষয়ে কিছু আলোচনা করি। এতেই কেল্লা ফতে!! তারা ভাবতে শুরু করে আমি বোধহয় একজন হ্যাকার হয়ে গেছি। আমার প্রতি তাদের আচোরন-ও কিছুটা বদলিয়ে যায়। এতে অবশ্য আমি বেশ মজায় পাচ্ছিলাম।
যা হোক, এখনো তাদের কে বোঝাতে পারিনি যে, একজন হ্যাকার কে, সে কি জানে আর কতটায় বা তার জ্ঞন? একবার ভেবে দেখুন তো। ছোট্ট একটি ঘরে বসে অথবা কখনো নিজের আনমনে চারপাশের সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শধুমাত্র একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ দিয়ে শতশত কিলোমিটার দুরের ওয়েব সাইট গুলোর সিকিউরিটি ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়ার মত যাদের মেধা, সে পর্যায় প্রর্যন্ত যেতে আমার আপনার কয়দিন লাগতে পারে?? শুধুমাত্র কিছু পোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ জানলে এবং ইন্টারনেট থেকে কিছু ফ্রী টুলস বা সফটওয়ার ডাউনলোড করে ব্যবহার করলেই কেউ হ্যাকার হতে পারে না। একজন প্রকৃত হ্যাকার কখনো অন্যের তৈরী করা কোন টুলস ববহার করেনা। সে তার প্রয়োজনীয় টুলস নিজে তৈরী করে এবং সেগুলো দিয়েই কাজ করে। এটি তাদের মেধার পরিচয়। আর যারা এ সকল টুলস ব্যবহার করে নিজেকে হ্যাকার হিসেবে পরিচয় দেয়, হ্যাকার না হয়েও তারা হ্যাকার। কিন্তু তারা কেমন হ্যাকার তা আপনি-ই বুঝে দেখুন।

থাক, আখন আর কথা না বাড়ায়। পোস্টের শিরোনাম থেকেই হয়তো বুঝতে পারছেন কি আছে এই পোস্টে। আজ আপনাদের আমি ইতিহাসের অন্যতম তিন 
জন সেরা হ্যকারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন "ভালো" যারা হ্যাকিং করেন বিভিন্ন সিস্টেমের ভুল-ত্রুটি শুধরে দিতে, অনেকেই আছেন যারা হ্যাকিং করেন নিজের স্বার্থে। আসলে হ্যাকিং শব্দটা আমরা ব্যবহার করি খারাপ অর্থে। কিন্তু হ্যাকিং মোটেও কোন খারাপ কিছু নয় যতক্ষন না আপনি এটাকে খারাপ ভাবে ব্যাবহার করছেন। মূলত যারা অন্যের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে হ্যাকিং করে তাদের কে "হ্যাকার" না, "ক্রাকার" বলে।
চলুন তাহলে, যেনে নেয়া যাক...


হ্যাকার জনাথন জেমস (Jonathon James)

ইন্টারনেট জগতে তার এই নামের থেকে তিনি কমরেড (c0mrade) নামেই বেশী পরিচিত। কিন্তু কি কারনে তার এত পরিচিতি? তিনি আমেরিকার প্রথম কিশোর হ্যাকার হিসেবে পরিচিত।  খুব ছোট বয়স থেকে তার হ্যাকিং এর উপর অনেক আসক্তি ছিলো। এবং এর ফল সরূপ সে খুব অল্প বয়সেই বেশ কিছু বর হ্যাকিং এর ঘটনা ঘটান। সাউথ ফ্লোরিডায় বেড়ে ওঠা  জেমেস তার জীবনের প্রথম হ্যাকিং সম্পন্ন করেন ১৫ বছর বয়েসে। এবং শাস্তি হিসেবে তিনি ১৬ বছর বয়সে প্রথম জেলে যান। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট থেকে ২৭ অক্টবরের মধ্যে জেমস তার মেধাকে কাজে লাগিয়ে ভাইরাস সম্পর্কে তার চিন্তা শক্তিকে অনেক দূর নিয়ে যান। এমন কি তিনি তখন মাত্র ১৫ বছর বয়সে বেল-সাউথ, মিয়ামি ডেড, আমেরিকার প্রতিরক্ষ্যা বিভাগ এবং নাসার ওয়েব সাইট হ্যাক করেন। এছাড়াও সে ব্যাকডোর কম্পিউটিং এর মাধ্যমে ডালাস এবং ভিরজিনার সার্ভারে একটি স্নিফার ইন্সটল করেন। যার মাধ্যমে তিনি ওই সব স্থানের প্রায় তিন হাজার তথ্য চুরি করেন। যার মধ্যে ছিল ওই এলাকা গুলোর সকল চাকুরীজিবিদের তথ্য এমন কি কমপক্ষ্যে ১০ টি অফিশিয়াল মিলিটারী কম্পিউটারের তথ্য। ফলে জেমস কে জেলেও যেতে হয়।
জেমস নাসার ওয়েব সাইট হ্যাক করে এবং সেখান থেকে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমান মূল্যের একটি সফটওয়ার এর সোর্সকোড ডাউনলোড করে। কিন্তু সে কেন এটি করে জানেন? সে শুধু জানতে চেয়েছিলো যে, নাসা কিভাবে মহাকাশ গবেষণা করে। আর এই জানতে চাওয়ার জন্য জেমস নাসার ওয়েব সাইটে যে ক্ষতি করেছিলো সেটি ঠিক করতে নাসার ওয়েব সাইট তিন সপ্তাহ বন্ধ রাখতে হয়। অপরদিকে এটি ঠিক করতে নাসা কে গুনতে হয় প্রায় আরো লক্ষাধিক ডলার। এরপর ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে তাকে ৬ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। মুক্তির পর তাকে আ৮ বছর বয়স প্রর্যন্ত করা নজরদারিতে রাখা হয় এবং এসময় তার কম্পিউটার ব্যবহারের উপরেও বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এভাবে হ্যাকিং করে রাতারাতি বিক্ষ্যাত হওয়া জনাথন জেমস এর জীবনের শেষ গল্পটা মোটেও আনন্দের ছিলো না। ২০০৭ সালে TJX নামের একটি কোম্পানীর ওয়েব সাইট বেশ বড় একটা হ্যাকিং এর ঘটনা ঘটে। যারফলে ওই কোম্পানীর অনেক ক্লাইন্টের ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যায়। এছাড়াও বস্টন মার্কেট, বার্নেস এয়ান্ড নোবেল, স্পোর্টস অথরিটি, ফরেভার-21, অফিস ম্যাক্স এবং ডেভ বাস্টার্স সহ আরো কিছু বড় বড় প্রতিষ্ঠানেও একি ধরনের হ্যাকিং এর ঘটনা ঘটে।
যদিও জেমস অস্বীকার করেন যে, তিনি এগুলোর সঙ্গে জরিত নয়, তবুও তাকে বিভিন্ন তদন্তের সম্মুখীন হতে হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের তদন্তের মাধ্যমে দেখেন যে এই ঘটনাতে জে,জে, নামে একজন জরিত। নামের সাথে মিলে যাওয়াতে জেমস তাদের প্রধান লক্ষ্যতে পরিনত হন। তবুও জেমস প্রথম থকেই বলে একি কথা বলছিলো যে এর সাথে সে জরিত নয়।এরপর ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল জেমস এর মৃত দেহ তার বাথরুমে পাওয়া যায়। সে তার বাবার পিস্টল দিয়ে নিজেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করে। হ্যাকিং এর এই ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ প্রমান করার আর কোন উপায় না পেয়ে সে আত্মহত্যা করে এবং সকল কে দেখিয়ে দেয় যে, আসলেও সে নির্দোষ। মৃত্যুকালে সে একটি চিঠি লিখে যায় যা নীচে দেয়া হলো -
"I honestly, honestly had nothing to do with TJX, I have no faith in the 'justice' system. Perhaps my actions today, and this letter, will send a stronger message to the public. Either way, I have lost control over this situation, and this is my only way to regain control. I die free."



দ্বিতীয় ঘটনাঃ


কেভিন মি্টনিক
জন্মঃ ৬-৮-১৯৬৩
   কেভিন মিটনিক (Kevin Mitnick) কে বলা হয়  "Fathe of all Hackers" হ্যাকার হিসেবে তিনি এতটায় দূর্ধর্ষ্য ছিলেন যে আমেরিকার বিচার বিভাগ তাকে "Most wanted computer criminal in U.S. history"  নামে আখ্যায়িত করে। এমন কি তার এই বিচিত্র জীবনকে ভিত্তীকরে দুটি চলচিত্র-ও তৈরী হয়।
১৯৮৮ সালে ডিজিটাল ইকুইপমেন্ট সিস্টেম (DEC) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট হ্যাক করায় তিনি এক বছর জেল খাটেন।
তবে তখন হ্যাকার না ভেবে চুরির মামলায় তাকে আসামী করা হয়। এরপর আর একটি হ্যাকিং এর ঘটনাতে তার এরেস্ট ওয়ারেন্টি ইস্যু হলে সে প্রায় আড়াই বছর পালাতক থাকেন।
এরপর ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে তিনি আমেরিকার জাতীয় প্রতিরক্ষ্যা বিবাগের ওয়েব সাইট সহ বিশ্বের বড় বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানীগুলোর সিস্টেম হ্যাক করেন Nokia, Motorola, Fujitsu  Sun Microsystems এর মত বড় কোম্পানীগুলো এ হ্যাকিংয়ের শিকার হয় সবাই তার হ্যাকিং দক্ষতা দেখে অবাক হয়ে যায় কিন্তু পরে FBI তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তিনিই হচ্ছেন বিশ্বের প্রথম হ্যাকার যাকে হ্যাকিং আইনের আওতায় বিচার করা হয় এরপর শাস্তি হিসেবে তার ৫ বছরের জেল হয় এবং ক্ষতিপূরন হিসেবে তাকে সকল সিস্টেম ঠিক করে দিতে বলা হয়
জানেন এখন তার কি অবস্থা? না, তার পরিনতি আর জনাথন জেমস এর মত হয়নি। জেল থেকে বের হয়ে সে কম্পিউটার সিকিউরিটি কনসালটেন্ট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং এখন সে মিটনিক সিকিউরিটি কনসালটেন্ট লিমিটেড এর কর্ণধার।




তৃতীয় ঘটনাঃ



আলবার্ট গনজালেয
     হ্যাকিং ভালো বা খারাপ দুই ধরনেরি হতে পারে। আমাদের এবারের হ্যাকার বিখ্যত ( বা কুখ্যাত ) হয়ে আছেন তার হ্যাকিং  দখ্যতা ব্যবহার করে অন্যের ক্রেডিট কার্ড থেকে অরর্থ চুরির মাধ্যমে।
আলবার্ট গনযালেয ( Albert Gonzalez ), স্যাডো ক্রু (ShadowCrew) নামে একটি হ্যাকিং গ্রুপের প্রধান হসেবে তার প্রোফেশনাল হ্যাকিং জীবনের সূচনা হয়। এরপর দুই বছরের মধ্যে তার হ্যাকিং দক্ষ্যতা কাজে লাগিয়ে তিনি প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ( হ্যা, ঠিকি পড়েছেন) ক্রেডিট কার্ড এবং ATM নম্বর সংগ্রহ করে। যা আমেরিকার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার সমান। এছাড়াও তারা আরো অনেকের তথ্য চুরির মাধ্যমে নকল পাসপোর্ট। নকল জম্ন সনদ এবং বিবিন্ন বীমা (Insurance) এর তথ্য চুরি করে। এসবের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪.৩ মিলিয়ন ডলার। এরপর TJX এবং হার্টল্যান্ড পেপেন্ট সিস্টেম নামে দুটি বড় কোম্পানীর ডাটাবেস হ্যাক করে চুরি করা ক্রেডিট কার্ড গুলো দিয়ে যখন তারা অর্থ তুলতে যায়, তখনি তারা ধরাপরে। আর এর শাস্তি হিসেবে আলবার্ট কে জেলে থাকতে হয় ২০ বছর।




চতুর্থ ঘটনাঃ


কেভিন পালসেন
জন্মঃ ১৯৬৪
     আমাদের এবারের হ্যাকার কেভিন পালসেন (kevin Paulsen). মাত্র ১৫ মিনিটের একটি হ্যাকিং এর জন্য আজ বিখ্যাত হয়ে আছেন তিনি। তার হ্যাকিং এর ঘটনাটাও অত্যান্ত মজর। লস আঞ্জেলেস এর কেটুএস-এফএম (KIIS-FM) নামের একটি রেডিও স্টেশনের সবগুলো (৮০০) টেলিফোন লাইন হ্যাক করার মাধ্যমে তিনি  ১০২ তম কলার হয়ে ঘোষিত porsche 944 s2 মডেলের একটি কার সহ আরো অনেক পুরষ্কার নিজের করে নেন।
এরপর ১৯৯১ সালে তিনি FBI এর হাতে গ্রেফতার হন। ৫১ মাস জেল ও ৫৬০০০ ডলার জরিমানা দিয়ে সে জেল থেকে মুক্তি পায়। এর পর অবশ্য তার জীবন অনেকাংশে পরিবর্তন হয়ে যায়। জেল থেকে বের হবার পর সে তার মেধা কে কিছু ভালো কাজে লাগিয়ে বেশ সুনাম অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে সে বিভিন্ন সাইটে বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড সনাক্ত করে এবং তাকে  দিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন অপরাধী কেও সনাক্ত করা হয়।
এরপর সে তার বিশেষ কিছু কাজের জন্য বেশ কিছু পরষ্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও হ্যাকিং ও তার ব্যবহারিক প্রয়োগ এবং সে হ্যাকিং কে কাজে লাগিয়ে ভালো কিছু করার উদ্দেশ্যে তিনি আগ্রহীদের জন্য কিছু বই লিখেন। নীচে এগুলো দেয়া হলো।


Awards

  • 2011: Webby Award (International Academy of Digital Arts and Sciences), Law category, for Threat Level.
  • 2011: Webby Award (International Academy of Digital Arts and Sciences), People's Voice award, Law category, for Threat Level.
  • 2010: SANS Top Cyber Security Journalists (SANS Institute).
  • 2010: MIN Best of the Web (Magazine Industry Newsletter), Best Blog, for Threat Level.
  • 2009: MIN Digital Hall of Fame (Magazine Industry Newsletter) Inductee.
  • 2008: Knight-Batten Award for Innovation in Journalism (J-Lab) Grand Prize.




Books



  • Poulsen, Kevin (2011). Kingpin: How One Hacker Took Over the Billion-Dollar Cybercrime Underground.

  • Poulsen, Kevin (2011). Kingpin: The True Story Of Max Butler, The Master Hacker Who Ran A Billion Dollar Cyber Crime Network.

  • Pendulous, Kevin (2011). Haker: Prawdziwa historia szefa cybermafii.



=======================================================================

আশা করি পোষ্টটি ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে comment করে জানাবেন। ধন্যবাদ।




1 comment:

Anonymous said...

Very Informative post.

Post a Comment

Bottom Ad [Post Page]